মাধ্যমিকে গোমতি জেলায় পাশের হার সর্বোচ্চ। খুশির হাওয়া.. মেধা তালিকায় তিন কৃতী।।

ত্রিপুরা পাবলিক ওপিনিওন রিপোর্টারঃ

ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবছর গোমতি জেলায় পাশের হার সর্বোচ্চ। তারমধ্যে উদয়পুর মহাকুমার বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠ থেকে দুইজন, উদয়পুর ইংলিশ মিডিয়াম  স্কুল থেকে একজন মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। সব মিলিয়ে উদয়পুর থেকে তিনজন মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। তবে উদয়পুরে বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠ গত বছরের মতোই এবছর মাধ্যমিকে দুইজন মেধাতালিকায় যুগ্মভাবে চতুর্থ ও সপ্তম স্থান দখল করেছে। উদয়পুর ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল গত বছরের ন্যায় মেধাতালিকায় ফলাফল ধরে না রাখতে পারলেও মাধ্যমিকে স্কুলের ৮ জন গণিতে শতকরা ১০০ ভাগ নম্বর পেয়ে স্কুলের মুখ উজ্জ্বল করেছে বলে জানালেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক হারাধন সাহা। এরমধ্যে অলড্রিন রায়  ৪৮৩ নম্বর পেয়ে মেধাতালিকায় যুগ্মভাবে তৃতীয় স্থান দখল করেছে। কিন্তু এবছরও বাজিমাত করেছে উদয়পুর বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠ। গত বছর মাধ্যমিকে দুইজন মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছিল এবছরও সেই ধারা অব্যাহত। এবছর ওই স্কুলের বর্ণালী দেবনাথ ৪৮২ নম্বর পেয়ে মেধাতালিকায় চতুর্থ স্থান দখল করেছে এবং সঞ্চন পাল ৪৭৯ নম্বর পেয়ে মেধাতালিকায় যুগ্মভাবে সপ্তম স্থান দখল করেছে। বর্ণালীর পিতা শশাঙ্ক শেখর দেবনাথ ১০৩২৩ এর একজন চাকরিচ্যুত শিক্ষক। মা বনশ্রী দেবনাথ একজন গৃহিণী। সঞ্চন পালের পিতা শিবপ্রসাদ পাল উচ্চ শিক্ষিত হলেও সরকারি চাকরি ভাগ্যে জোটেনি। তিনি জাতীয় স্তরের একটি এনজিওতে কর্মরত রয়েছেন। স্বাভাবিকভাবেই বলা যায় বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠ থেকে মেধা তালিকায় স্থান করে নেওয়া দুজন ছাত্র ছাত্রীকেই কিন্তু আর্থিক অনটনের মধ্যদিয়ে লড়াইটা চালিয়ে যেতে হয়েছে। তাদের এই সাফল্য তাদের পরিবার-পরিজনের  সব কষ্ট দুঃখকে ঘুচিয়ে অবশেষে হাসি ফোটাতে পেরেছে। তবে দুজনেই আগামীদিনে বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে ইচ্ছুক। সঞ্চন এর পিতা শিবপ্রসাদ বাবু জানান আগামী দিনে বিজ্ঞান বিভাগের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া তাদের পক্ষে একপ্রকার অসাধ্য। রাজ্য সরকার এবং অন্যান্য শিক্ষানুরাগী মহল থেকে সহযোগিতা পেলে ওনার ছেলে আগামী দিনে ভালো করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন। তবে বর্ণালী আই এ এস অফিসার হতে ইচ্ছুক। কারণ জিজ্ঞাসা করলে বর্ণালী জানায় গোমতী জেলাশাসক ডক্টর টিকে দেবনাথ থেকে তার এই অনুপ্রেরণা। সাধারণ প্রশাসনে সরকারি চাকুরীর মাধ্যমে  সমাজকে সেবা করতে চায় সে।  তবে সঞ্চন এই ক্ষেত্রে কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করে নি বলে জানায় সে। তবে গণিত তার প্রিয় বিষয় । তাই বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক। এদিকে অলড্রিন রায় উদয়পুর ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল থেকে মাধ্যমিকে তৃতীয় স্থান দখল করেছে যুগ্মভাবে। কিন্তু এখন সে সাবরুম গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক হারাধন সাহা জানান অলড্রিন বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক। এবং সে স্কুলে বরাবরই ভালো ছাত্র। তবে স্কুলের রেজাল্ট আরো ভালো হওয়ার প্রত্যাশা ছিল বলে জানালেন হারাধন বাবু। বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠ এর প্রধান শিক্ষক পার্থ সারথি দাস জানান গত কয়েক বছর ধরেই তাদের স্কুল ভালো ফল করছে। করোনা সংকটকালে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন বলে জানিয়েছেন। এদিন স্কুলের এই আনন্দঘন মুহূর্তে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বিমল চক্রবর্তী, গৌতম সাহা, সঞ্জীব ভট্টাচার্য প্রমুখ।

 

আরো পড়ুন