মাংস খেতে গিয়ে শ্বাসনালীতে আটকে গেছে হাড্ডি!

সোমেন সেন, ত্রিপুরা পাবলিক ওপিনিয়ন রিপোর্ট:
মুরগির মাংস খাওয়ার সময় মৃত্যু মুখে এক যুবক। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ সোমবার রাতে ‌বিলোনিয়ার ২২ বছরের  যুবক কার্তিক দাস ভাতের সঙ্গে  মাংস  খাওয়ার সময়  ‌হাড়‌ গিলে ফেলে।  মূলত মোবাইলের প্রতি ঝোঁক থাকায় অন্যমনস্ক  হয়ে  ঘটনাটি ঘটে বলে জানা যায়। তড়িঘড়ি রাতেই তাকে বিলোনিয়া থেকে গোমতী জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে তার পরিবার!  চিকিৎসক প্রদীপ মল্লিক জানান সোমবার রাতে মাংস খাওয়ার সময় শ্বাসনালীর  ঠিক নিচে চার সেন্টিমিটার   দৈর্ঘ্যের মুরগির মাংসের হাড়  গলার ভেতরে ঢুকে শ্বাসনালীতে আটকে যায়। কার্তিক দাশের পরিবার গোমতী জেলা হাসপাতালে  ইএনটি স্পেশালিস্ট প্রদীপ মল্লিক কে দেখান।‌ উনার পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু হয়। কিন্তু কোনভাবেই বিশ্বাস করে উঠতে পারছিলেন না। ‌ তারা  সিদ্ধান্ত নেন এক মুহূর্ত  বিলম্ব না করে আগরতলা  বেসরকারি হাসপাতালে  নিয়ে যাবেন।  তখন কার্তিক দাস প্রচন্ড যন্ত্রনা ছটফট করছিলেন । শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। এমন অবস্থায় কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন তার পরিবার। তাদের ধারণা ছিল  এমন জটিল  সমস্যা কোনভাবেই  গোমতি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা করে সুস্থ হয়ে ওঠা  সম্ভব নয়।  তাই রোগীর পরিবার চাইছিল আগরতলা  বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে।  তাই তাদেরকে রেফার লিখে দেওয়ার জন্য বারবার চাপ দিতে থাকেন।কিন্তু  গোমতী জেলা হাসপাতালের ইএনটি স্পেশালিস্ট  ডক্টর প্রদীপ মল্লিক  কার্তিক দাসের পরিবারকে বোঝাতে চেষ্টা করেন যে এখানেই তা বের করা সম্ভব।  চিকিৎসক শ্রী মল্লিক সোমবার রাতে তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং ওষুধ পত্র দিয়ে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেন। ‌ পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার কোন প্রকার কাটা ছেঁড়া ছাড়া কন্ঠ নালীর  অনেকটা নীচে থেকে হাড়টি বের  করেন।  চিকিৎসক ডক্টর প্রদীপ মল্লিক বলেন এন্ডোস্কোপির মাধ্যমে মাংসের হাড়টি কোন জায়গায় আটকে রয়েছে তা নিশ্চিত হয়ে কোন প্রকার কাটাছেঁড়া ছাড়াই তা সফলভাবে বের করেন। এর ফলে রোগী কার্তিক দাস ও তার পরিবার বেজায় খুশি।  চার সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যের  মুরগির মাংসের হাড়টি বের করায়  পরিবারের স্বস্তি ফিরে আসে।  নাক কান গলার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রদীপ মল্লিক  ‌জানান মাছের কাটা গলায়  আটকে  চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে আসতে দেখা গেলেও মাংসের হাড় গলার নিচে আটকানোর ঘটনা  বিরল। ১০০ তে একটিও পাওয়া যায় না। উল্লেখ্য সাম্প্রতিক  গোমতী জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক  বিশ্বজিৎ পাল এবং প্রদীপ মল্লিক গোমতী জেলা হাসপাতালে সার্জিক্যাল এবং  ইএনটি চিকিৎসায়  কয়েকশত জটিল অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। বিশেষ করে চিকিৎসক বিশ্বজিৎ পাল এবছর সার্জিক্যালে রাজ্যের অন্যতম সেরা চিকিৎসকের পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছেন। তবে পরিষেবা জনিত বিভিন্ন সমস্যা ও অভিযোগের মধ্য দিয়ে  গত এক বছর ধরে গোমতী জেলা হাসপাতালে সরকারি খরচে এ ধরনের অপারেশন দক্ষতার সঙ্গে করার ফলে একাংশ রোগী ও তাদের পরিবার দারুণভাবে উপকৃত হচ্ছেন। গোমতী জেলা হাসপাতালে গত এক বছরে দুই হাজার ছোট বড় 
অপারেশন করা হয়েছে বলেজানান  সিএমও কমল রিয়াং।

আরো পড়ুন